গলদা নার্সারি পুকুরে রেণু বা পিএল ছাড়ার পর দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধির মাধ্যমে এরা সুস্থ ও সবল জুভেনাইল-এ পরিণত হয়। অল্প গভীরতা সম্পন্ন জলাশয় রেণু বা পিএল প্রতিপালনের জন্য নার্সারি পুকুর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পিএল বড় হওয়ার সাথে সাথে এদের বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়। গলদার নার্সারি কার্যক্রমে এক স্তর পদ্ধতিতে এর ব্যবস্থাপনা করা হয়।
কার্প জাতীয় রেণু পোনার নার্সারি পুকুর প্রস্তুতির মতই গলদা নার্সারি প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। পিএল মজুদের উপযোগী নার্সারি পুকুর প্রস্তুতি কাজের ধাপগুলো নিচে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।
ক) আগাছা পরিষ্কার ও পাড় সংস্কার এবং পাড়ের উপর ডালপালা পরিষ্কার,
খ) রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ দূরীকরণ,
গ) চুন প্রয়োগ: ১ কেজি পাথুরে চুন/শতাংশ হারে প্রয়োগ করতে হবে;
ঘ) সার প্রয়োগ: প্রতি শতাংশে জৈব সার ১০ কেজি, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম ও টিএসপি ৭৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
গলদা চিংড়ির পিএল-এর দৈহিক বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ভিন্নতর। চিংড়ির পিএল খোলস বদলানোর মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। খোলস বদলের সময় চিংড়ি অত্যন্ত দুর্বল থাকে। এ সময় সবল চিংড়ি অর্থাৎ যেগুলো খোলস বদলায় না সেগুলো দুর্বল গুলোকে খেয়ে ফেলতে পারে। এজন্য চিংড়ি নার্সারি ব্যবস্থাপনায় আশ্রয়স্থল স্থাপনের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, যাতে অন্য কোন প্রাণী বা চিংড়ি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশংকা না থাকে। পুকুরের তলার কিছু জলজ উদ্ভিদ থাকলে (হাইড্রিলা, নাজাস) তা চিংড়ির আশ্রয়স্থল হিসেবে ভাল কাজ করে।
ভাল বা নারিকেলের পাতা এমনভাবে পুকুরের মাটিতে পুঁতে দিতে হবে যাতে পাতার অংশ মাটি থেকে একটু উপরে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাল বা নারিকেলের পাতা কোনাকোনি (৪৫) কোনে পুঁতে দিলে আশ্রয়স্থল হিসেবে বেশি জায়গা পাওয়া যাবে এবং পাতাগুলো মাটির উপর থাকলে সহজে পচবে না। বাঁশের কঞ্চি আঁটি বেঁধে অথবা প্লাস্টিকের পাইপ পৃথক পৃথকভাবে পুকুরের তলায় মাটির উপর রেখে দিলে ভাল হয়। খেজুরের পাতা ও আঁটি করে বেঁধে দেয়া যায়।
পিএল মজুদের ১-২ দিন আগে তাল, নারিকেল বা খেজুর পাতা প্রতি শতাংশে ১-২ টি হিসেবে স্থাপন করতে হবে। অন্যান্য উপকরণগুলো আনুপাতিক হারে ব্যবহার করতে হবে।
Read more